
ধামরাইয়ে করোনা প্রতিরোধে আগাম প্রস্তুতি
করোনা ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে ধামরাইতে ২০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন রুমের মাধ্যমে ৫ শয্যাবিশিষ্ট একটি করোনা সেল খোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তবে সেল খোলা হলেও ধামরাইয়ে এখনও করোনা আক্রান্ত কোন রোগী পাওয়া যায়নি। এমন কি রোগী সনাক্ত করার কোন যন্ত্রপাতি বা অন্য কোন ব্যবস্থা নেই।
|আরো খবর
শনিবার (১৪ মার্চ) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেজ এ করোনা ভাইরাস নিয়ে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধামরাইতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোন রোগীর তথ্য পাওয়া যায় নি বলে জানান ধামরাই উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নূর রিফফাত আরা। তবে জনমনে সচেতনার সৃষ্ঠি হয়েছে। অনেকে মাস্ক কিনে ব্যবহার করাও শুরু করেছে।তবে বাজারে মাস্ক এর সংকট নেই । সাধারণ লোকজন প্রতিদিনের ন্যায় তাদের কর্মস্থলে যাচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ধামরাই সরকারি হাসপাতালের অধীনে রোয়াইল ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর এলাকার সাব- সেন্টারে ২০ শয্যাবিশিষ্ট একটি করোনা সেল খোলা হয়েছে। সেখানে ১৫ টি বেড করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য,বাকী ৫ টি সেল বেড আইসোলেশন রোমের জন্য ব্যবহার করা হবে। সেই সঙ্গে রেপিট রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। সেখানে মেডিকেল কনসালটেন্টকে প্রধান করে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম ধামরাই উপজেলাতে গঠন করে দিয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব বেনজির আহমদকে উপদেষ্টা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সামিউল হককে সভাপতি এবং উপজেলা পিরবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নূর রিফফাত আরাকে সদস্য সচিব করে উপেজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ২০ শয্যাবিশিষ্ট সেল খোলা হয়েছে। করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য কোন যান্ত্রপাতি ও কিট না থাকার কারনে আইডিসিআরের সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্যকম্লেকসের পক্ষ থেকে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান নূর রিফফাত আরা।
এদিকে, ধামরাইয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোন রোগীর তথ্য পাওয়া যায় নি। হাসপাতালে সাধারণ স্বর্দি,কাশি জনিত রোগী আসছে। তার পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিশেষভাবে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশে ৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর জন্য মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে গুজব। আতঙ্ক দেখা দেয় জনমনে। ফলে ধামরাইতে ৫০- শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন এ বিষয়ে নড়েচড়ে বসেন। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। তবে করোনা আক্রান্ত কোন রোগের অস্তিত্ব নেই ধামরাইতে।
দেশব্যাপি করোনা ভাইরাস নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।যারা কখনো মাস্ক পড়েন নি তারাও সকলেই বাজার ও দোকানে ছুটছেন মাস্ক কেনার জন্য। ফলে বাজারের দোকান গুলোতে সামান্য ভিড় বা পূর্বের চেয়ে কিছু বেশি মাস্ক কিনলেও কোন সংকট দেখা দেয় নি। অনেকেই আবার মাস্ক না কিনে খালি হাতে ফিরেছেন।তারা মনে করছে আমাদের এলাকায় এ ধরনের ভাইরাসের কোন প্রভাব নেই। আর যারা কিনতে পেড়েছেন তারা বাজার, পথে ঘাটে মাস্ক ব্যবহার করছেন। সমান্য কাজে ঘর থেকে বের হলেই এখন যে কোন বয়সের মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছেন।
গৃহবধূ হালিমা খাতুন বলেন, দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ৩ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এরপর থেকে আমরা আতঙ্কে রয়েছি। আমার ছোট ছোট ছেলে মেয়ে রয়েছে। বাইরে বের হতে হয়। সেজন্য দোকানে মাস্ক কিনতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ২০ টাকার মাস্ক ৫০ টাকা দিতে হয়েছে।
কবির হোসেন জানান, করোনা ভাইরাসের জন্য মাস্ক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাস্ক কিনতে দোকানে গেলেও যা পাওয়া গেছে দাম আগের চেয়ে সামান্য বেশি। তারপরও পাওয়া গেছে।
ধামরাইয়ে ৫০-শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নূর রিফফাত আরা বলেন, ২০ শয্যাবিশিষ্ট সেল খোলা হয়েছে ধামরাইয়ের কৃষ্ণনগর সাব- সেন্টারে।সেখানে ৫ শয্যাবিশিষ্ট একটি করোনা সেলও খোলা হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য কোন যান্ত্রপাতি ও কিট না থাকার কারনে আইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে । তবে এখনো কোন রোগী পাওয়া যায় নি। কৃষ্ণনগর সাব- সেন্টারে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২৪ ঘন্টাই আমাদের সেবা চালু আছে। এছাড়াও কোন ধরনের উপশম দেখা দিলে ০১৭৩০৩২৪৪০০ নম্বরে ফোনে যোগাযোগ করতে পারবে। আমি সব সময় আইডিসিয়ারের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতেছি।
তিনি আরো বলেন, বিদেশ ফেরত কোন হাচি,কাশির বা ঠান্ডা রোগে আক্রান্ত কোন রোগী আসলে আমরা তাদের আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।তবে টাকার মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়ায়।প্রাথমিক অবস্থায় তাদের নিজ বাড়িতেই ১৪ দিন নিবিড় পরিচর্যার মধ্যে রাখা হবে।অর্থাৎ তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।তার পর যদি তার মধ্যে করোনার কোন উপমম পাওয়া যায় তখন তার চিকিৎসা করানো হবে।এর মধ্যে সে বাড়ির বাইরে লোকজন, বাজার, বা দূরে পরিবহনে করে যাতায়াত করতে পারবে না।
নূর রিফফাত জানান, কিভাবে করোনা ভাইরাস ছড়ায়, তার লক্ষণ এবং করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মানুষের করণীয় কি তা নিয়ে ও আলোচনা করেন। আমরা শিক্ষা অফিসারকে চিঠি দিবো সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যেন সতর্ক করে দেওয়া হয়। তবে মঙ্গলবার থেকে উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকার সাব- সেন্টারে সকল প্রকার চিকিৎসার জন্য খোলে দেওয়া হবে।
জানা যায়, ধামরাই পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে মানুষের মাঝে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত হ্যান্ড বিলি করা হচ্ছে। মানুষ যেন সচেতন হয়ে থাকে তবে এ রোগ নিয়ে এতো বেশি আতঙ্কের কিছু নেই। শুধু একটু সচেতনতার প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সামিউল হক বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য সদর হাসপাতালে করোনা সেল ও পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যারা বিদেশ ফেরত তাদের প্রতি নজরদারী চলেছ। বিদেশ ফেরত হলেই যে তারা করোনা আক্রান্ত হবে এমন কোন কথা নেই। তবে গুজবে কান না দেবার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ জার্নাল/ এমএম
0 Response to "ধামরাইয়ে করোনা প্রতিরোধে আগাম প্রস্তুতি"
Post a Comment