যতখুশি আপনার ওয়েবসাইটের টাকা ইনকাম করো

PopAds.net - The Best Popunder Adnetwork
করোনাভাইরাস: প্রতিষেধক তৈরির প্রক্রিয়া কতদূর?

করোনাভাইরাস: প্রতিষেধক তৈরির প্রক্রিয়া কতদূর?

ফ্রান্সের লিলে প্রতিষেধক তৈরির কাজ করছেন এক ভাইরোলোজিস্ট ও গবেষকছবির কপিরাইটGETTY IMAGES
Image captionফ্রান্সের লিলে প্রতিষেধক তৈরির কাজ করছেন এক ভাইরোলোজিস্ট ও গবেষক
করোনাভাইরাস বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে ধ্বংস করার মত কোনো ঔষধ বা এর থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করার কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি।
আমরা আসলে করোনাভাইরাস থেকে প্রাণরক্ষাকারী ঔষধ থেকে কত দূরে রয়েছি?

করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক কবে আবিষ্কার হবে?

এই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য দুরন্ত গতিতে গবেষণা চলছে।
এই মুহূর্তে ২০টিরও বেশি প্রতিষেধক তৈরির কাজ চলছে।
এর মধ্যে একটি অন্যান্য প্রাণীর ওপর পরীক্ষা না চালিয়েই মানুষের দেহে পরীক্ষা করা শুরু করেছে। তারা এটি নিরাপদ কিনা এবং এর কার্যকারিতা আছে কিনা তা বোঝার চেষ্টা করছে।
অন্যান্য বিজ্ঞানীরা এখনো অন্য প্রাণীর দেহে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করার ধাপে রয়েছে এবং এই বছরের শেষভাগের মধ্যে ফলাফল পাওয়ার আশা করছে।
তবে বিজ্ঞানীরা এ বছরের মধ্যে প্রতিষেধক তৈরি করতে পারলেও এটিকে বৃহৎ পরিসরে উৎপাদন করার চ্যালেঞ্জ থেকেই যায়।

আরো পড়ুন:

করোনাভাইরাস: বর্তমান অবস্থা শেষ হতে কত সময় লাগবে?
করোনাভাইরাস নির্মূলে সচল হয়েছে রোবট
'লকডাউন' শিবচরের প্রথম দিনের পরিস্থিতি
দৌলতদিয়ার যৌনপল্লী ২০দিনের জন্য লকডাউন
যা করা প্রয়োজন
অর্থাৎ, বাস্তববাদী চিন্তা করলে, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের আগে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক বাজারে আসবে না।
আর এই সবই হচ্ছে অত্যন্ত দ্রুত সময়ে এবং প্রতিষেধক তৈরির গতানুগতিক ধারার বাইরে। কাজেই এই প্রতিষেধক যে আসরেই কাজ করবে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই।
মনে রাখতে হবে যে মানুষের মধ্যে ছড়ায় এরকম চারটি করোনাভাইরাস রয়েছে। সেরকম একটি ভাইরাসই সাধারণ সর্দিজ্বরের কারণ, এবং সেগুলোর একটির প্রতিষেধকও নেই মানুষের কাছে।

বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর:

করোনাভাইরাস এলো কোত্থেকে, ছড়ালো কিভাবে- যতসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব
করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়েছে
করোনাভাইরাস: মক্কা-মদিনায় মসজিদ চত্বরে নামাজ স্থগিত
ভারতে নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যাকারী চারজনের ফাঁসি কার্যকর
করোনাভাইরাস: লক্ষণ ও বাঁচার উপায় কী?

সব বয়সের মানুষকে কী সুরক্ষা দেবে এই প্রতিষেধক?

এটি প্রায় অবশ্যম্ভাবী যে, এই প্রতিষেধক বয়স্কদের ওপর কম সফলভাবে কাজ করবে। এটি প্রতিষেধকটির জন্য নয়, বরং বয়স্ক মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রতিষেধকে বেশি কার্যকর হয় না।
সাধারণ ফ্লু'র ক্ষেত্রে প্রতিবছরই আমরা এই ধারা দেখতে পাই।

এর কী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকবে?

সব ধরণের ওষুধ, এমনকি সাধারণ ব্যাথানাশকেরও, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে।
কিন্তু ক্লিনিকাল ট্রায়াল ছাড়া একটি পরীক্ষামূলক প্রতিষেধকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা সম্ভব নয়।
এই বিষয়টির দিকেই ঔষধ প্রশাসন নজর রাখতে চাইবে।

প্রতিষেধক কার প্রয়োজন হবে?

প্রতিষেধক যদি তৈরি হয় তাহলে তার যোগান হবে সীমিত - অন্তত শুরুর দিকে - কাজেই কার জন্য প্রতিষেধক দেয়া হবে তা নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
যেসব স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভিড-১৯ এর রোগীদের সংস্পর্শে আসবেন তাদের সবার আগে প্রতিষেধক দেয়া হবে।
যেহেতু এই রোগটি বয়স্ক মানুষের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ, কাজেই বয়স্কদের মধ্যে এই প্রতিষেধক কার্যকর হলে তাদেরও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হতে পারে।
তবে যারা বয়স্কদের সাথে থাকে বা তাদের সেবা দেয়, সেসব মানুষকেও প্রতিষেধক দেয়া প্রয়োজনীয় হতে পারে।
ঔষধের বিষয়ে কী হবে?
চিকিৎসকরা বর্তমানে অ্যান্টি-ভাইরাল ঔষধ পরীক্ষা করে দেখছেন সেগুলো করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর কিনা। এই ঔষধগুলো যেহেতু মানুষের ব্যবহারের জন্য নিরাপদ হিসেবে স্বীকৃত, তাই এই ক্ষেত্রে গবেষণা দ্রুতগতিতে পরিচালিত হচ্ছে।
আক্রান্ত দেশগুলোর হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা চলছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডক্টর ব্রুস এডওয়ার্ড বলেন: "আপাতত একটি ঔষধই কার্যকর বলে আমরা মনে করছি এবং তা হলো রেমডেসিভির।"
এটি ইবোলার ঔষধ হিসেবে প্রস্তুত হলেও বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস মারতে বলে ধারণা করা হয়।
তবে এই ঔষধের পরীক্ষার ফলাফলের জন্য আমরা এখনও অপেক্ষমাণ।
বিজ্ঞানীরা আশা করছিলেন এইচআইভি'র ঔষধ (লোপিনাভির ও রিটোনাভির) করোনাভাইরাসের বিপক্ষে কার্যকর হবে কিন্তু এই ঔষধ দু'টোর পরীক্ষার ফল ছিল হতাশাজনক।
মারাত্মকভাবে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার কমানো, ভাইরাসের পরিমাণ কমানো অথবা আরোগ্য, কোনোটিই অর্জন করা যায়নি এই ঔষধের মাধ্যমে।
তবে যেহেতু এই ঔষধের পরীক্ষা মারাত্মকভাবে অসুস্থ রোগীদের মধ্যে চালানো হয়েছিল, (যাদের প্রায় চারভাগের একভাগ মারা যায়) এমনও হতে পারে যে এটি সংক্রমণের ঐ পর্যায়ে রোগীদের শরীরে কাজ করে না।
ম্যালেরিয়ার প্রাচীন এবং সস্তা ঔষধ ক্লোরোকিন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে কিনা সেবিষয়ে জল্পনা ছিল।
গবেষণাগারের পরীক্ষায় দেখা গেছে যে এই ঔষধ ভাইরাসটিকে মারতে সক্ষম, তবে রোগীর শরীরে থাকা ভাইরাস এটি মারতে পারে কিনা সেই পরীক্ষার ফল জানার অপেক্ষায় আছি আমরা।
যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশে এই ঔষধের পরীক্ষা চলছে।
গবেষকরা প্রতিষেধক তৈরি করে তা অন্যান্য প্রাণীর ওপর পরীক্ষা করা শুরু করেছেনছবির কপিরাইটGETTY IMAGES
Image captionগবেষকরা প্রতিষেধক তৈরি করে তা অন্যান্য প্রাণীর ওপর পরীক্ষা করা শুরু করেছেন

প্রতিষেধক বা চিকিৎসা তৈরি হওয়ার আগে কী করার আছে?

প্রতিষেধক সংক্রমণ রোধ করে এবং এই মুহূর্তে সংক্রমণ রোধের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
আপনি যদি করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হন, তবে অধিকাংশ মানুষের জন্যই এটি সাধারণ একটি অসুখ হিসেবে চিহ্নিত হবে। সেক্ষেত্রে ঘরে বিশ্রাম, প্যারাসিটামল এবং প্রচুর পরিমাণ পানি পানের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব।
তবে কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে রোগ জটিল আকার ধারণ করতে পারে এবং তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
এখন পর্যন্ত তৈরি করা প্রতিষেধকের পরীক্ষা চলছে বিভিন্ন দেশেছবির কপিরাইটSCIENCE PHOTO LIBRARY
Image captionএখন পর্যন্ত তৈরি করা প্রতিষেধকের পরীক্ষা চলছে বিভিন্ন দেশে

কীভাবে প্রতিষেধক তৈরি করা হয়?

যে কোনো প্রতিষেধক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সামনে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে (অথবা তাদের ক্ষুদ্র অংশ) তুলে ধরে।
শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তখন তাদেরকে বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত করে এবং তারপর এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে শেখে।
এরপর যদি কখনো আসলেই সেই ধরণের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা শরীর আক্রান্ত হয়, তখন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে ঐ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
যুগ যুগ ধরে প্রতিষেধক তৈরির মূল পদ্ধতিতে আসল ভাইরাসটিকেই ব্যবহার করা হয়।
হাম, মাম্পস এবং রুবেলা (এমএমআর) প্রতিষেধক ঐ ভাইরাসগুলোর দুর্বল অনুরূপ ভাইরাস ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে যেন ভাইরাসগুলো শরীরে পুরোপুরিভাবে সংক্রমণ তৈরি করতে না পারে।
মৌসুমি ফ্লু'য়ের ঔষধ তৈরি করা হয় একের পর এক সাধারণ ফ্লু'য়ের প্রজাতিগুলো নিয়ে।
নতুন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির কাজ নতুন ধরণের, কম পরীক্ষিত পদ্ধতিতে করা হচ্ছে যেটিকে 'প্লাগ অ্যান্ড প্লে' প্রতিষেধক বলা হয়। যেহেতু আমরা নতুন করোনাভাইরাসের জেনেটিক কোড জানি, কাজেই আমরা ভাইরাসটি তৈরি করার পূর্ণ নকশা পেতে পারবো।

0 Response to "করোনাভাইরাস: প্রতিষেধক তৈরির প্রক্রিয়া কতদূর?"

Post a Comment

Email subscription

Enter your email address: